দিরাইয়ের আলোচিত ট্রিপল মার্ডার- মেয়রসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা,তদন্তে নামছে র‌্যাব

প্রকাশিত: ৮ অক্টোবর ২০২০, ৭:৪০ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক ::  ফের সচল হলো দিরাইয়ের আলোচিত সেই ট্রিপল  মার্ডার মামলা ।  এনিয়ে এলাকায় বইছে ব্যাপক আলোচনার ঝড় ।  সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের কুলঞ্জ ইউনিয়নের জারলিয়া (ঘোড়ামারা সাতপাকিয়া) জলমহাল দখল নিয়ে বহুল আলোচিত ট্রিপল মার্ডারের (তিন খুন) ঘটনার মামলায় উপজেলা আওয়ামীলীগের তিন নেতাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে ফের গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।

এরা হলেন, দিরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তালুকদার, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দিরাই পৌরসভার মেয়র মোশাররফ মিয়া, মেয়রের দুই পুত্র উজ্জ্বল মিয়া ও তাজবীর মিয়া। উজ্জ্বল মিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।

গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ দিরাই থানা পুলিশের হাতে পৌঁছেছে বলে বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) নিশ্চিত করেছেন দিরাই থানার এসআই গোলাম মুর্শেদ চৌধুরী ফাত্তাহ।

এরআগে পুলিশ, সিআইডি ও পরবর্তীতে পিবিআই’র তদন্ত প্রতিবেদনে এই ৫ আসামিসহ মোট ১৪ জনকে অব্যাহতি দিয়ে চার্জশিট ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে দাখিল করা হয়। বাদীর আপত্তি স্বত্বেও ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট তাদের অব্যাহতি দিয়ে দাখিলকৃত চার্জশিট আমলে নিলে ওই আদেশের বিরুদ্ধে মামলার বাদী একরার হোসেন ফের নারাজি দিয়ে দায়রা জজে রিভিশন আবেদন করেন (মামলা নং-২৪)। বাদীর আবেদন আমলে নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের ১২ ফ্রেব্রুয়ারি ২০১৯ ইং তারিখের আদেশ রদ ও রহিত করে বিগত ১০আগস্ট ২০২০ ইং তারিখে দায়রা জজ আদালতের বিচারক ওয়াহিদুজ্জামান শিকদার মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য র‌্যাব’কে দায়িত্ব দিয়ে আদেশ প্রদান করেন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের জারলিয়া (ঘোড়ামারা সাতপাকিয়া) জলমহালের মালিকানা নিয়ে বিরোধে জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আলহাজ মতিউর রহমানের অনুসারী যুবলীগ নেতা একরার হোসেনের সাথে দিরাই পৌরসভার মেয়র মোশাররফ মিয়া, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তালুকদার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়ের লোকজনের সংঘর্ষে একরার হোসেনের পক্ষের উজ্জ্বল, তাজুল ও শাহারুল নামে গ্রামের নীরিহ ৩ লোক নিহত হয়। পরে এঘটনায় একরার হোসেন বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন, মামলা নং ৫/২০১৭ (দিরাই)।

ট্রিপল মার্ডারের আসামী হয়েও ওই সময়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে প্রকাশ্যে অফিস, রাজনৈতিক কার্যক্রমসহ বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ণ ব্যক্তিদের সাথে সভা সেমিনারে যোগ দিতেন আওয়ামীলীগের এসব নেতারা। প্রশাসন ছিল নির্বিকার। সুরঞ্জিত সেনের মৃত্যুর পর উপ-নির্বাচনকে সামনে রেখে হাইকোর্ট থেকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের শর্তে ৬ সপ্তাহের অস্থায়ী জামিন নেন গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হওয়া এই ৫ জনসহ মোট ১৪ জন। এরপর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিম্ন আদালতে আত্মসর্মপণ না করে হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করেন তারা।

 

জাগোভাটি /আআ/লি/০৮-১০-২০/