যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামির বিরুদ্ধে অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ !

প্রকাশিত: ৫ নভেম্বর ২০২০, ১১:০৬ পূর্বাহ্ণ

তাহিরপুর প্রতিনিধি::মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে সুনামগঞ্জের ট্যাকেরঘাট সাব-সেক্টরে শহীদ হওয়া বীর বিক্রম সিরাজ হত্যাকান্ডের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে চলমান যুদ্ধাপরাধী মামলার অন্যতম আসামি আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে এবার ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে নিজ স্ত্রী ও চাচাতো ভাই সহ ৩০ লক্ষাধিক টাকা ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে তাহিরপুর হিফযুল উলুম সিনিয়র মাদ্রাসায় লোকবল নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে।

স্বজনপ্রীতি ও ঘুষ বানিজ্যের বিষয়ে তদন্ত পূর্বক মাদ্রাসার নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করার আবেদন জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন স্থানীয় একাধিক নিয়োগ প্রার্থী।

গতকাল বুধবার এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন জাহাঙ্গীর আলম ভুইয়া, শবনম আক্তার ও অপু মিয়া নামের একাধিক নিয়োগ প্রার্থী।

এছাড়াও লিখিত অভিযোগের অনুলিপি মাদ্রাসা বোর্ড অধিদপ্তর, সাংসদ সদস্য সুনামগঞ্জ -১,দুর্নীতি দমন কমিশন চেয়ারম্যান সহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব কে দেওয়া হয়েছে।

লিখিত অভিযোগটি থেকে জানা যায়, এবছরের ২৭ অক্টোবর তাহিরপুর হিফযুল উলুম সিনিয়র মাদ্রাসার ৬ টি বিভিন্ন পদে লোকবল নিয়োগের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষার সময় পূর্ব নির্ধারিত সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও দেড় ঘন্টা পেরিয়ে ১১: ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়। সেই সাথে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পূর্বে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম তার স্ত্রী ও চাচাতো ভাই সহ অপর ৪ জন নিয়োগ পরীক্ষার্থীকে নিয়ে গোপন বৈঠকে দেখতে পায় পরীক্ষার্থীরা। বিষয়টি নিয়ে অন্যান্য পরীক্ষার্থীরা কথা বলাতে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম উত্তেজিত হয়ে বলেন পরীক্ষা অলরেডি হয়ে গেছে এবং ৬ জন লোকও মনোনীত করা হয়েছে। এখানে থেকে অযথা ডিস্টার্ব করার দরকার নেই।

জানা যায়, নিয়োগ পরীক্ষায় মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম এর স্ত্রী মাহমুদা বেগমকে হিসাব রক্ষণ পদে ও চাচাতো ভাই শরীফ মিয়াকে উপাধ্যক্ষ পদে মনোনীত করা হয়েছে। সেই সাথে আরো ৪ টি পদে ৩০ লক্ষ টাকা ঘুষ বাণিজ্যর মাধ্যমে মনোনীত করার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগকারী জাহাঙ্গীর আলম ভুঁইয়া বলেন, মাদ্রাসার নিয়োগ পরীক্ষাটি ছিল শুধু ফরমালিটি,মুলত পুর্ব থেকেই মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম তার স্ত্রী ও চাচাতো ভাই সহ আরো ৪ জন লোককে মনোনীত করে রেখেছিলেন। পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর স্বজনপ্রীতি ও ঘুষ বাণিজ্যর বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য বাচ্চু মিয়া বলেন, আমি নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে কিছুই জানি না, তবে যেভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তা অবশ্যই স্বজনপ্রীতি এবং অনিয়মের।

বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদ্মাসন সিংহ লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে পরবর্তী ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জাগোভাটি /আআ/৫-১১-২০/