সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুকুটের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৩৩ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:   সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুটের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ তুলেছেন খোদ তার পরিষদের সদস্যরা। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগে মুকুটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণেরও আবেদন জানানো হয়। ২২ সেপ্টেম্বর দেয়া অভিযোগে জেলা পরিষদের ১০ জন সদস্য নাম ও মোবাইল নম্বরসহ স্বাক্ষর করেছেন। অভিযোগ পত্রে স্বাক্ষরকারী সদস্যগন হলেন ২১ সেপ্টেম্বর সিনিয়র সচিব বরাবর করা অভিযোগ পত্রে স্বাক্ষরকারীরা হচ্ছেন জেলা পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান সৈয়দ তারিক হাসান, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আব্দুস সহিদ মুহিত, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবু আব্দুল্লাহ চৌধুরী, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাহতাব উল হাসান, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জহিরুল ইসলাম, ৫ নম্বর (সংরক্ষিত) ওয়ার্ডের সদস্য মোছা. নূরুন্নাহার , ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. নাজমুল হক, ২ নম্বর (সংরক্ষিত) ওয়ার্ডের সদস্য ফৌজি আরা বেগম, ৪ নম্বর (সংরক্ষিত) ওয়ার্ডের সদস্য সাবিনা সুলতানা ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আব্দুল আজাদ।

আবেদনে উল্লেখ করা হয়, সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট নির্বাচিত জেলা পরিষদ সদস্যদের অবজ্ঞা ও অবহেলা করেন। মাসিক সভার কোনো কার্যবিবরণী পরিষদের সদস্যদের দিয়ে এক তরফা পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছেন। এমনকি, কার্যবিবরণীর কপি না দিয়ে সদস্যদেরকে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য জবরদস্তি করে থাকেন।
তারা অভিযোগে আরো উল্লেখ, পরিষদের চেয়ারম্যান স্বেচ্ছাচারিতা ও অন্যায়ভাবে সম্পূর্ণ একক সিদ্ধান্তে রাজস্ব ও এডিপির বরাদ্দ সমূহ নিজের পছন্দসই কিংবা ইচ্ছে মতো বরাদ্দ-বণ্ঠন করেন। এমনকি জেলা পরিষদের বার্ষিক বাজেটেও সদস্যদের কোনো প্রস্তাবনা, মতামত গ্রহণ করা হয় না। এককভাবে চেয়ারম্যান তা প্রণয়ন করেন। বাজেটের কপিও সদস্যগনকে প্রদান করা হয় না। প্রতি অর্থ বছরে ৩-৬ লাখ টাকার প্রকল্প প্রতি সদস্যদের বরাদ্দ দেন, যা নিতান্তই কম। বিধান থাকা সত্ত্বেও এই দীর্ঘসময়ে পরিষদের কোনো স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠন করেননি মুকুট। সুনামগঞ্জে জেলা পরিষদের মাধ্যমে প্রদান করা সরকারের বিশেষ ত্রাণ ও অন্যান্য বরাদ্দ জেলা পরিষদ সদস্যদের অবহিত না করে এককভাবে তিনি বিলি-বন্টন করেন।

আবেদন সুত্রে আরো জানা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত সরকারের বিভিন্ন সংস্থার বরাদ্দকৃত অর্থের তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানানো হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার উপ-পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, এরকম কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে এখনো আসেনি। অভিযোগের কপি পেলে বিষয়টি বুঝতে পারবো। অভিযোগকারী একাধিক সদস্য জানান, প্রথম সভা থেকেই জেলা পরিষদ সদস্যদের প্রতি তুচ্ছতাচ্ছিল্য প্রদর্শন আসছেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট। সদস্যদের মতামত উপেক্ষা করে তিনি নিজের খেয়াল খুশি মতো একক সিদ্ধান্তে পরিষদ পরিচালনা করে আসছেন। বিভিন্ন প্রকল্পে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বেশি বরাদ্দ দেয়ায় পরিষদের আর্থিক ক্ষতি সাধন হচ্ছে। ব্যক্তিস্বার্থে প্রথম থেকেই তিনি জেলার কয়েকটি নির্দিষ্ট এলাকায় বাড়তি টাকা বরাদ্দ দিয়ে অন্য এলাকাকে বঞ্চিত করেছেন। জেলা পরিষদসহ বহু কাজে আত্মীয়-স্বজনকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। সদস্যদের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট বলেন, আসছে নির্বাচনে আমার ভাবমূর্তি বিনষ্ট করতে এগুলো একটি মহলের মিথ্যাচার।